কিন্তু আপনার যদি এই দুই সময় পড়তে ভালো না লাগে তো আপনার উচিৎ হবে এই দুই সময় না পড়ারই। কারণ মন না বসলে জোড় করে মন বসানো খুবই দুষ্কর। তবে আপনাকে বের করতে হবে নির্দিষ্ট সময় কখন আপনার পড়তে মন বসে। সময় বের করে নির্দিষ্ট একটি রুটিন করতে পড়তে শুরু করুন সেই সময় থেকেই। কাজেই আপনার যখন ভালো লাগে তখনই পড়তে শুরু করুন।
আমরা অনেকেই অনেক ভাবে পড়ালেখি করি। প্রত্যেকেই ভালো ছাত্র, কিন্তু কেউ কেউ তার থেকে বেশি অর্থাৎ আরো ভালো ছাত্র। আমাদের মাঝে রয়েছে দুই শ্রেনীর ছাত্র কেউ কেউ সল্প পড়েই ভালো রেজাল্ট করে আবার কেউ কেউ সারাদিন পড়েও ভালো রেজাল্ট করতে পারে না। এর কারণ'টা কি? কারণ একটাই যারা সল্প পরেই ভালো রেজাল্ট করে তাদের ভালো রেজাল্ট করার পিছনে প্রধান কারণ হলো তারা ওইটুকু সময় যেটুকুই পরে তা ভালো ভাবে বুঝে বুঝে পড়ে, অপর দিকে যারা সারাদিন পরেও ভালো রেজাল্ট করতে পারে না বরং বরাবরেই খারাপ রেজাল্ট করে তার পিছে প্রধান কারণ হলো তারা বুঝে বুঝে পড়ে না বরং তোতাপাখির মতো পড়তে থাকে। কাজেই পড়ালেখা করতে হলে বুঝে বুঝে পড়তে হবে। আমি এই টপিক্স এ পড়ালেখার কয়েকটা সহজ ফর্মুলা তুলে ধরবো, শুধু পড়লেই হবে না আপনি যদি এই ফর্মুলা গুলো অনুসরণ করতে পারেন তাহলে আমি জোড় দিয়ে বলতে পারি আপনি ভালো ছাত্র থেকে আরো ভালো ছাত্র হয়ে উঠবেন ইনশা'আল্লাহ।
পড়ালেখা করে কি হবে?!! এই একটি প্রশ্নবোধক উদ্ভট আশ্চর্যকর বাক্য'টা আজকের যুবসমাজের মাঝে প্রায়ই শোনা যায়। পড়ালেখা করেই তো মানুষ আলোকিত হতে পারে। আলোকিত হতে হলে অবস্যই পড়ালেখা করতে হবে। বই পড়তে হবে, প্রচুর বই। শুধু একাডেমিক বই নয় বরং সকল বই।
পড়ালেখার উত্তম সময়; কখন পড়বেনঃ
পড়ালেখার উত্তম সময় হলো মূলত ফজর ও রাত। কারণ এই সময় টা নিরব থাকে। শুনশান পরীবেশ। তাছাড়া মাথায় চাপ বেশি থাকে না। আপনি এই দুই সময়ই পড়তে পারেন। যেমন আমি শুধু রাত আর ফজরে/সকালে পড়ি। আর সারাদিন অন্যান্য বই পড়ি বা অন্য কোনো কাজ করি। তেমনি ভাবে আপনিও এটি করতে পারেন। কিন্তু আপনার যদি এই দুই সময় পড়তে ভালো না লাগে তো আপনার উচিৎ হবে এই দুই সময় না পড়ারই। কারণ মন না বসলে জোড় করে মন বসানো খুবই দুষ্কর। তবে আপনাকে বের করতে হবে নির্দিষ্ট সময় কখন আপনার পড়তে মন বসে। সময় বের করে নির্দিষ্ট একটি রুটিন করতে পড়তে শুরু করুন সেই সময় থেকেই। কাজেই আপনার যখন ভালো লাগে তখনই পড়তে শুরু করুন।
প্রথম ধাপঃ
আপনার যদি গল্প উপন্যাস ইত্যাদি বই পড়ার অভ্যাস থাকে তাহলে আপনি নতুন বই পাওয়ার সাথে সাথে গল্পের মতো করে পুরো বই রিডিং পড়া শুরু করে দিতে পারেন। প্রয়োজনে আলাদা একটা রুটিন করে নিন যে আপনি এক মাস সময় নিয়ে শুধু রিডিং পড়বেন পুরো বই। রিডিং পড়ার প্রধান কারন হলো, আপনি যখন সম্পূর্ণ বই'টা রিডিং পড়ে শেষ করবেন (বোঝার দরকার নেই, শুধু রিডিং পড়লেই হবে) তখন আপনার কাছে বইটা অনেক সহজ হয়ে যাবে। একটা ধারণা ডুবে যাবে পুরো বইটার। রিডিং পড়া যখন শেষ হবে তখন এক দিন কোনো পড়া নেই। বিশ্রাম।
দ্বিতীয় ধাপঃ
এরপর আবার প্রথম থেকে পড়া শুরু করে দিন। এবার নো হাংকি পাংকি। বুঝে বুঝে পুরো বই পড়া শুরু করে দিন ধিরে ধিরে। দেখবেন বইটা আপনার কাছে অনেক সহজ হয়ে গেছে। যা পড়বেন তা অবস্যই বুঝে বুঝে পড়বেন। না বুঝে কখনোই পড়বেন না। নিজেকে কখনোই মনে করবেন না যে এটা আপনার দ্বারা সম্ভব। অবস্যই সম্ভব। নিজেকে ছোট ভাবছেন তো, আল্লাহ তায়ালার সৃষ্টি কে ছোট ভাবছেন। কাজেই নিজেকে কখনোই তুচ্ছ ভাববেন না।
তৃতীয় ধাপঃ
এ ধাপে শুধু রিভিশন। এতোদিন যা যা পড়েছেন তা অবস্যই রিভিশন দিতে হবে আপনাকে এই ধাপে। এ জন্য আলাদা একটা রুটিন করে নিবেন। নিজেকে কখনোই ফাঁকি দিবেন না।
পরীক্ষার আগে প্রস্তুতিঃ
সামনে পরীক্ষা। রিভিশন একদমই দেয়া হয় নি। নো টেনশন। বানিয়ে ফেলো স্মার্ট সিলেবাস। নির্দিষ্ট একটা সময় সেট করে ফেলো। তোমার টার্গেট হলো ১ মাসে সব বই রিভিশন দেয়া। এজন্য প্রয়োজনীয় একটা টাইমটেবল তৈরি করে ফেলো। তারপর ওই টাইম অনুযায়ী পড়া শুরু করে দাও। তাহলে দেখবে পরীক্ষার সময় আর কোনো টেনশন থাকবে না। টেনশন ফ্রী। পরীক্ষা হবে ঝাকানাকা।
সারাবছর পড়া হয়নিঃ
খুব টেনশন। খুব ডিপ্রেশন। পরীক্ষার মাত্র বাকি অল্প কয়েকদিন। এখন কী করবো। কিভাবে রেজাল্ট ভালো করবো। আহারে! যদি এই এক বছর ভালো করে পড়তাম তাহলে কতই না ভালো হতো। এত টেনশন থাকতো না, পরীক্ষা নিয়ে কোনো চিন্তাই করা লাগতো না।
কিছু ছাত্র রয়েছে যাদের সারা বছর টাই কাটে নানান সব অজুহাতে। কাল পড়বো কাল পড়বো করে বছর চলে যায় কিন্তু শেষ মূহুর্তে শুরু হয়ে যায় উপরের সব চিন্তা ভাবনা। ফলে মনে হয় ধুরো যা হবার হবে। যার কারনে পরীক্ষার রেজাল্টও খারাপ হয়ে যায়। কেউ কেউ আবার ডাব্বা খেয়ে বসে থাকে।
যারা সারা বছর বই ছুয়েও নি। পড়ে পড়বো করে দিন গিয়েছে তাদের জন্য একটা সহজ ফর্মুলা তুলে ধরবো। আশাকরি এই টুকু মেনে চললে অন্তত্য ভালো রেজাল্ট করা যেতে পারে। আমি আহসান হাবিব স্যারের ভাইরে আপুরে বইটাতে উল্লেখ্য করা ৩ মাসে পুরো বই শেষ করার উপায় টা বলবো। তিনি মাসে বই শেষ করার জন্য আপনাকে বই টাকে ৩ ভাগে ভাগ করে নিতে হবে।
১. যেগুলো পড়া হয়েছে
২. যেগুলো অল্প হয়েছে তবে সমস্য আছে
৩. যেগুলো একদমই হয় নি
এই তিনভাগে ভাগ করে ফেলো পুরো বই। এবার ৩ নাম্বার থেকে পড়া শুরু করো। পড়তে থাকো যতক্ষন না ১ নাম্বারের মতো হয়। ১.৫ মাস সময় নিয়ে পড়তে থাকো যেগুলো পড়া হয়নি। যখন ৩ নাম্বার পড়া শেষ হবে তখন ৩ বাদ দিয়ে শুরু করে দাও ২ নাম্বার টা পড়া। সময় নাও ১ মাস। যখন ২ নাম্বার পড়া শেষ হবে তখন পুরো টাই রিভিশন দিতে শুরু করে দাও। সময় নাও ১৫ দিন।
তাহলেই হয়ে গেলো ৩ মাসে পুরো বই পড়া শেষ।
তো শুরু করে দিন এখন থেকেই। হ্যাপি লার্নিং...
COMMENTS